স্টার্টআপ খাতে নতুন উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করার লক্ষ্যে আগামী ২০২৫–২৬ অর্থবছরের বাজেটে ১০০ কোটি টাকার স্টার্টআপ তহবিল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন অর্থ উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদ। এর আগে গত এপ্রিল মাসে ঢাকায় অনুষ্ঠিত বিনিয়োগ সম্মেলনে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর এই খাতের উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে ৮০০ থেকে ৯০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হবে জানিয়েছিলেন। এ বিষয়ে শিগগিরই একটি প্রজ্ঞাপন জারির কথাও বলেছিলেন গভর্নর, যদিও এ নিয়ে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ এখনো চোখে পড়েনি।
দেশের স্টার্টআপ কোম্পানিগুলোর মোট বিনিয়োগের ৯২ শতাংশই আসে বিদেশ থেকে। গত এক দশকে এই খাতে ১ বিলিয়ন বা ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি বিনিয়োগ এসেছে, যা দেশীয় মুদ্রায় ১২ হাজার ২০০ কোটি টাকার মতো (প্রতি ডলার ১২২ টাকা ধরে)। এর মধ্যে দেশীয় বিনিয়োগ মাত্র ৯৮৭ কোটি টাকা। দেশীয় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান লাইটক্যাসল পার্টনার্সের এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
বিনিয়োগে দেশের স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠানগুলো এখনো বেশি নির্ভরশীল বিদেশি বিনিয়োগকারীদের ওপর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অধিকাংশ বিনিয়োগকারী কেবল পুঁজি দেন; তবে অভিজ্ঞতা, দিকনির্দেশনা ও প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে সহায়তা দেয় না অধিকাংশ প্রতিষ্ঠান। এর ফলে স্টার্টআপগুলো উঠতি পর্যায়ে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা থেকে বঞ্চিত হয়। দেশের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমে আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ থাকলেও স্থানীয় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠানগুলোর কাঠামোগত দুর্বলতা, বিনিয়োগ দৃষ্টিভঙ্গি ও দক্ষতার অভাবের কারণে তারা পিছিয়ে পড়ছে। এর সঙ্গে দেশীয় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল (ভিসি) ও অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টরের সংখ্যাও কম। এর সঙ্গে দেশের অধিকাংশ স্টার্টআপ উদ্যোক্তারা ব্যবসা পরিকল্পনা প্রণয়ন, বিনিয়োগকারীদের কাছে তা উপস্থাপন এবং করপোরেট সুশাসনসহ নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পর্যাপ্ত পরামর্শ পাচ্ছেন না। ফলে বেশির ভাগ উদ্যোক্তা বিনিয়োগকারীদের আকর্ষণ করতে পারছেন না বলে জানান খাতসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।