চুক্তি বরখেলাপের অভিযোগে জেনেক্স ইনফোসিস লিমিটেডের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এনবিআরের ব্যবস্থার মুখে জেনেক্সভ্যাট আদায়ের যতগুলো যন্ত্র বসানোর কথা ছিল তা করা হয়নি, ভিন্ন ব্র্যান্ডের যন্ত্র সরবরাহ করে শর্ত ভেঙ্গেছে ।
প্রতিবেদনের তথ্য বিশ্লেষণ করে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার অংশ হিসেবে নোটিস দেওয়া হয়েছে। এতে ২৮ দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়েছে।নোটিসে জেনেক্স ইনফোসিসের বিরুদ্ধে যথাসময়ে নির্দিষ্ট পরিমাণ ইএফডি মেশিন বসাতে না পারা, বসানো ইএফডি ঠিকঠাক স্থাপন না করা,
সঠিক ব্রান্ডের ইএফডি না বসানো এবং যেগুলো বসিয়েছে তাতে বিক্রির তথ্য সংরক্ষণসহ বিভিন্ন ফিচারের কমতি থাকার অভিযোগ আনা হয়েছে।
ইএফডি মেশিন বসানো এবং এ প্রকল্পের বাস্তবায়ন, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) বা ভ্যাট বাড়ানো ও কর্মকর্তাদের সক্ষমতা বাড়ানোর জন্য চুক্তিবদ্ধ হলেও অনেকক্ষেত্রেই সেগুলোর ব্যত্যয় করেছে বেসরকারি কোম্পানিটি। দুই বছরের মাথায় বিভিন্ন দায়িত্ব যথাযথ পরিপালন করতে না পারায় চুক্তির
বিভিন্ন ব্যত্যয়কে সামনে এনে কোম্পানিটির বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না সেই ব্যাখ্যা চেয়ে গত ২৮ অক্টোবর নোটিস দিয়েছে এনবিআর।
কর বৃদ্ধি ও আহরণ বাড়াতে জেনেক্স ইনফোসিসকে দায়িত্ব দিয়ে প্রথমবারের মত কোনো বেসরকারি কোম্পানিকে ২০২২ সালের নভেম্বরে নিজেদের কাজে যুক্ত করেছিল দেশের প্রধান রাজস্ব আদায়কারী প্রতিষ্ঠান এনবিআর।
জেনেক্সের বিরুদ্ধে ইএফডি মেশিন বসানোর চুক্তির আগে ভ্যাট ফাঁকির প্রমাণও পায় এনবিআর। পাশাপাশি এর চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আদনান ইমাম ও পরিচালকদের বিরুদ্ধেও আয়কর ফাঁকির প্রমাণ পায় সংস্থাটির কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি)।
জেনেক্সের সঙ্গে চুক্তির শর্ত বাস্তবায়নের অগ্রগতি পর্যালোচনায় এনবিআর একটি ‘টেকনিক্যাল’ ও একটি ‘ফাংশনাল’ কমিটি গঠন করে।
কমিটি দুটির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেনেক্সের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ী আইসিনো করপোরেশনের ইএফডি/এসডিসি আমদানির কথা থাকলেও ভিন্ন উত্স থেকে ১৫ হাজার ৬০০টি যন্ত্র আমদানি করে বিভিন্ন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বসানো হয়েছে।
নোটিসে বলা হয়েছে, ২০২৩ সালের ৩ নভেম্বর চুক্তির এক বছরের মধ্যে ২০ হাজার ইএফডি বসানোর কথা ছিল। পরে সমন্বয় সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী একই সংখ্যক মেশিন বসানোর জন্য ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সময় বেঁধে দেওয়া এনবিআর।
তবে জেনেক্স বাস্তবে তিনটি জোনে যন্ত্র বসাতে পেরেছে ১৫ হাজার ৯৯৫টি। এরমধ্যে ১২ হাজার ডিভাইস প্রকৃতভাবে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে স্থাপন করা হয়েছে এবং বাকি ডিভাইসগুলো সিস্টেমে পেয়ারিং অবস্থায় ছিল।
কোম্পানির করপোরেট অ্যান্ড রেগুলেটরি অ্যাফেয়ার্স প্রধান আশিকুর রহমান ইএফডি বসানোর প্রকল্পে প্রত্যাশা পূরণ করতে না পারায় মাঠ পর্যায়ে দোকান মালিক সমিতি ও খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে পুরোপুরি অসহযোগিতা পাওয়ার দাবি করেন।
এমনকি জেনেক্স ইনফোসিসের কর্মীরা খুচরা ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অপমানিত হওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে।