গতকাল রোববার বিকেল ৫টা। প্রকৃতি থেকে বিদায় নিচ্ছে শীত। বিকেলের মিঠে রোদে বিস্তীর্ণ মাঠে জমায়েত হয়েছেন হাজারো মানুষ। তাঁদের মধ্যে আছেন নারী ও শিশু থেকে শুরু করে নানান বয়সী মানুষ। সবাই এসেছেন এ অঞ্চলের ১২৯ বছরের ঐতিহ্যবাহী ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা দেখতে। চট্টগ্রামের লোহাগাড়া উপজেলার আমিরাবাদ ইউনিয়নের সুখছড়ি গ্রামের সভার বিলে প্রতিবছর মাঘের শেষ সপ্তাহে আয়োজিত হয় এই ঘোড়দৌড়। শতবর্ষী এই ঘোড়দৌড় দেখতে গতকালও অন্তত তিন হাজার মানুষ হাজির হয়েছিলেন। ঘোড়দৌড় উপলক্ষে আধা কিলোমিটার এলাকাজুড়ে বসেছিল গ্রামীণ মেলা। মাটির জিনিস, খেলনা, মিঠাই, তেলেভাজা দোকান বসে গিয়েছিল সারি সারি। সব মিলিয়ে উৎসবের আমেজ ছিল গ্রামজুড়ে।
রেওয়াজ অনুযায়ী এই ঘোড়দৌড়ে অংশগ্রহণকারী সবাই পুরস্কার, মানে নগদ টাকা পান। তবে স্মারক হিসেবে টাকার সঙ্গে প্রথম তিনজনকে দেওয়া হয় বালতি। রোববার বিকেলে সরেজমিনে দেখা যায়, বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা লাল ও সাদা রঙের ৮টি ঘোড়া সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে আছে। বাঁশি বাজতেই প্রাণপণ ছুটে চলে ঘোড়াগুলো। এ সময় উপস্থিত থাকা হাজারো দর্শনার্থীর হই-হুল্লোড় ও হর্ষধ্বনি চারপাশ মুখর করে তোলে। ৫০০ মিটার ৩ ধাপে দৌড়ের পর থামে ঘোড়াগুলো।
বাচ্চাদের নিয়ে ঘোড়দৌড় দেখতে আসা এনামুল হক বলেন, ‘ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা দেখে খুবই ভালো লাগছে। এমন আয়োজনে হাজারো দর্শকের উপস্থিতিতে আবেগাপ্লুত হয়েছি। এ প্রতিযোগিতা দেখে হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য মনে পড়ে গেল। এমন আয়োজন যুগের পর যুগ প্রচলিত থাকুক।’