দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ গত এক মাসে ৯৭ কোটি ৭৫ লাখ ১০ হাজার ডলার কমে ২ হাজার ৪৬৭ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার বা ২৪ দশমিক ৬৭ বিলিয়ন ডলারের দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) এ প্রতিবেদন প্রকাশ করে বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আইএমএফের বিপিএম-৬ হিসাব মান অনুযায়ী ২৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময়ে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৯৫৬ কোটি ৭৫ লাখ ডলার।আর বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাবে রিজার্ভ দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৪৬৭ কোটি ৮৪ লাখ ডলার।
এদিকে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা জানিয়েছেন, প্রবাসী আয়ের প্রবৃদ্ধিতে দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিমাণ বেড়ে দাঁড়িয়েছে। গত জুলাই থেকে আগস্টে রেমিট্যান্সের প্রবাহ বেড়েছে। আর্থিক সংকট কাটতে শুরু করায় ব্যাংকগুলো নিজেরাই ডলার কেনাবেচা করতে পারছে।
এছাড়াও তিনি বলেন, ফরেন এক্সচেঞ্জ রিজার্ভ ক্ষয়রোধ করা সম্ভব হচ্ছে। কারণ রেমিটেন্সের প্রবৃদ্ধি ঘটছে। গত অর্থবছরের তুলনায় এ অর্থ বছরে ৬০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। জুলাইয়ের সঙ্গে অগাস্টের প্রবৃদ্ধি ধরলে এটা প্রায় ৯০ শতাংশ।
অপরদিকে প্রবাসী আয়ে গত মাস আগস্টের ধারাবাহিকতা রয়েছে চলতি মাস সেপ্টেম্বরেও। চলতি মাসের তিন সপ্তাহে এসেছে ১৬৩ কোটি ৪২ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় (প্রতি ডলার ১২০ টাকা হিসাবে) ১৯ হাজার ৬১০ কোটি টাকার বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, চলতি মাস সেপ্টেম্বরের শুরু থেকেই রেমিট্যান্স আসার গতি ভালো রয়েছে। এ ধারা অব্যাহত থাকলে মাসটিতে আড়াই বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স আসবে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসার পেছনে সচেতনতা কাজ করছে। আবার বৈধ পথে ডলারের দরবৃদ্ধিতে হুন্ডি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তারা। এতে বাড়ছে রেমিট্যান্স আসার গতি।
গত দুই বছরে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ব্যাপকভাবে কমে যাওয়া নিয়ে আলোচনা হয়। আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন গভর্নর আহসান এইচ মনসুর রিজার্ভ বাড়বে বলে আশ্বাস দেন।
অপরদিকে আগামী ২০২৫ সালের জুন মাসের মধ্যে বাংলাদেশকে ২ থেকে ৩ বিলিয়ন ডলারের ঋণ সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদের সঙ্গে বৈঠকের পর দাতা সংস্থাটির দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট মার্টিন রেইজার এ কথা জানান।
বিশ্বব্যাংকের পাশাপাশি আরও কয়েকটি দাতা সংস্থা বাংলাদেশকে ঋণ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এসব ঋণের অর্থ আসা শুরু করলে দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বেড়ে যাবে বলে মনে করছে সংশ্লিষ্টরা।