অর্থনীতি পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে নতুন প্রণোদনার ঘোষণা দিয়েছে চীন সরকার, যা বিশেষভাবে ব্যক্তি খাতে সহায়তা দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি। তবে প্রণোদনার মোট অঙ্ক সম্পর্কে বিস্তারিত জানানো হয়নি, রিপোর্ট করেছে রয়টার্স।
চীনের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সম্প্রতি অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, অর্থ সংগ্রহের জন্য সরকার আরও বন্ড ছাড়বে। আয় কমে যাওয়া পরিবারের জন্য ভর্তুকি দেওয়ার পাশাপাশি আবাসন বাজারে সহায়তা এবং রাষ্ট্রীয় ব্যাংকগুলোর মূলধন বৃদ্ধি করে ঋণ দেওয়ার সক্ষমতা বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে।
গত মাসে রয়টার্সের এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, চীন সরকার প্রায় ২ ট্রিলিয়ন বা ২ লাখ কোটি ইউয়ান মূল্যের বিশেষ সার্বভৌম বন্ড ছাড়ার পরিকল্পনা করছে। এর ফলে ভারতের শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ তুলে নিয়ে চীনের বাজারে ঢুকতে শুরু করেছেন, ফলে গত সপ্তাহে ভারতের শেয়ারবাজারের সূচক বড় পতনে গেছে।
আগস্টের শেষ দিকে চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও অন্যান্য নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো জানিয়েছিল, কোভিড-১৯-এর পর সবচেয়ে বড় আর্থিক প্রণোদনা আসছে, যা নিয়ে ভোক্তা ও ব্যবসায়ীরা অপেক্ষা করছিলেন। সরাসরি সহায়তার পাশাপাশি বন্ধকি ঋণের সুদহার কমানোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যা মূলত আবাসন বাজার পুনরুজ্জীবিত করার উদ্দেশ্যে।
অর্থমন্ত্রী ল্যান ফোয়ান সংবাদ সম্মেলনে বলেন, স্থানীয় সরকারের বরাদ্দ ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে গোপন ঋণঝুঁকি মোকাবিলা করবে চীন সরকার। স্থানীয় বন্ড কোটায় ১৬ হাজার ৯৮১ কোটি ডলার বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে বিদ্যমান ঋণঝুঁকি মোকাবিলা ও সরকারি বকেয়া নিষ্পত্তির জন্য।
নতুন প্যাকেজের আওতায় ব্যাংক পুনর্গঠন করা হবে এবং স্থানীয় সরকারকে অব্যবহৃত জমি কেনার জন্য বিশেষ বন্ড ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হবে, যা স্থানীয় সরকার ও আবাসন কোম্পানির তারল্য ও ঋণের চাপ কমাতে সাহায্য করবে।
নিম্ন আয়ের পরিবার ও ছাত্রদের জন্যও প্রণোদনা দেওয়া হবে। স্নাতকদের জন্য জাতীয় বৃত্তির সংখ্যা বার্ষিক ৬০ হাজার থেকে দ্বিগুণ করে ১ লাখ ২০ হাজার করা হবে এবং শিক্ষার্থীপ্রতি বৃত্তির পরিমাণ ৮ হাজার থেকে ১০ হাজার ইউয়ান বৃদ্ধি করা হবে।
এদিকে, সেপ্টেম্বরে চীনে মূল্যহ্রাস আবার ঘটেছে, যা নির্দেশ করে ভোক্তাদের চাহিদা যথেষ্ট বাড়ছে না। এই পরিস্থিতিতে অর্থমন্ত্রী ল্যান ফোয়ান বলেছেন, অর্থনীতির এই অধোগতি রুখতে চলতি বছর আরও ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যদিও সেসব ব্যবস্থা কবে নেওয়া হবে, সে বিষয়ে তিনি পরিষ্কার কিছু বলেননি। বিনিয়োগকারীরা আশা করছেন, সরকারের নতুন প্রণোদনা মূল্যহ্রাসের চাপ কমাবে।