ওয়ালটন গ্রুপের মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানিগুলো পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির চেষ্টা চালাচ্ছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। তার পরিপ্রেক্ষিতে ওয়ালটন গ্রুপের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে গতকাল বৃহস্পতিবার বৈঠক করেছে বিএসইসি।রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিএসইসি কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয় এ বৈঠকটি । অনুষ্ঠিত বৈঠকে সংস্থার চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ সভাপতিত্ব করেন। ওয়ালটেনর পক্ষে বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এস এম শামসুল আলম,ব্যবস্থাপনা পরিচালক এস এম মাহবুবুল আলম, ওয়ালটন ডিজিটেক ইন্ডাস্ট্রিজের চেয়ারম্যান এস এম রেজাউল আলম, ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক জিয়াউল আলম, জ্যেষ্ঠ নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম।
বৈঠকে বিএসইসির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, ওয়ালটনের বিভিন্ন খাতের প্রতিষ্ঠিত কোম্পানি রয়েছে। দেশে ও বিদেশে সুনামের সঙ্গে ব্যবসা করছে। ওয়ালটন বাংলাদেশের সর্বোচ্চ কর ও ভ্যাট দাতাদের মধ্যে একটি। দেশের অর্থনীতিতে এর শক্তিশালী প্রভাব রয়েছে।
ওয়ালটনের অধীনে থাকা ভালো মৌলভিত্তির কোম্পানিকে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তি ও তালিকাভুক্ত ওয়ালটন হাইটেকের লেনদেনযোগ্য বা ফ্রি-ফ্লোট শেয়ার বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হয়। এ সময় কোম্পানির শীর্ষ ব্যক্তিদের ব্যাংকঋণের বদলেপুঁজিবাজার থেকে অর্থ সংগ্রহ, গ্রিন বন্ড ইস্যুর আহ্বান জানানো হয় বিএসইসির পক্ষ থেকে। এ ছাড়া ওয়ালটনের সম্পদ ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠান ও মিউচুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে অর্থ সংগ্রহ করে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগেরও আহ্বান জানানো হয়।
রাশেদ মাকসুদ তার বক্তব্যে বলেন, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে কোম্পানির সুফল জনসাধারণের কাছে পৌঁছানোর সুযোগ তৈরি হয়। দেশের বৃহৎ ব্যক্তি উদ্যোগের কোম্পানি ও গ্রুপগুলো তাদের প্রতিষ্ঠানকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারেন পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্তির মাধ্যমে। এর মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি দেশের জনসাধারণও উপকৃত হবেন।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালে ওয়ালটন গ্রুপের কোম্পানি ওয়ালটন হাইটেক ইন্ডাস্ট্রিজ শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। শুরুতে কোম্পানি মাত্র ১ শতাংশ শেয়ার বাজারে ছাড়ে। পরে এ নিয়ে বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে প্রশ্ন দেখা দিলে কোম্পানির কয়েকজনউদ্যোক্তা তাঁদের হাতে থাকা শেয়ার বিক্রি করে বাজারে শেয়ারের সংখ্যা বাড়ান।
বিএসইসি জানিয়েছে, পুঁজিবাজারে ওয়ালটনের ফ্রি ফ্লোট শেয়ার বৃদ্ধি, ব্যাংক ঋণের পরিবর্তে পুঁজিবাজারের মাধ্যমে অর্থায়ন, সাসটেইনেবল ও গ্রিন বন্ডের মাধ্যমে অর্থায়ন ইত্যাদি বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। একইসঙ্গে ওয়ালটন গ্রুপের অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কোম্পানির বিষয়ে কথা হয়। তাদের মিউচ্যুয়াল ফান্ডের মাধ্যমে ফান্ড সংগ্রহ করে পুঁজিবাজারে নতুন বিনিয়োগ আনার বিষয়েও আলোচনা হয়। ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারের দাম ৪ শতাংশ বা ২২ টাকা কমে দাঁড়িয়েছে ৫২৪ টাকায়। বৃহস্পতি বার কোম্পানিটির প্রায় ২ কোটি টাকার সমমূল্যের ৩৭ হাজার শেয়ারের হাতবদল হয়।
বিএসইসির দাবি, পুঁজিবাজারে ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির আনার উদ্দেশ্যে বড় ও স্বনামধন্য গ্রুপগুলোর সঙ্গে নিয়মিত আলোচনায় বসছে সংস্থাটি। ইতোমধ্যে এ ধরনের বেশ কিছু বৈঠকে বিএসইসি ইতিবাচক সাড়া পেয়েছে। প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে খুব শিগগিরই ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানির তালিকাভুক্তি সম্ভব হবে বলে আশাবাদী করছে বিএসইসি।