Sunday, January 12, 2025
Sunday, January 12, 2025
বাড়িভ্যাটকেন হঠাৎ বৃদ্ধি পেলো ভ্যাট!

কেন হঠাৎ বৃদ্ধি পেলো ভ্যাট!

অর্থবছরের প্রথম চার মাসের শেষে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৭ দশমিক ৬৬ শতাংশ। এ হার গত সাড়ে তিন বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন। শুধু তা–ই নয়, এ সময় শিল্পের প্রয়োজনীয় মধ্যবর্তী পণ্য ও মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানিও কমেছে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাস জুলাই-নভেম্বরে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির জন্য ঋণপত্র বা এলসি খোলা ২০২৩-২৪ অর্থবছরের একই সময়ে তুলনায় ২৬ শতাংশ কমেছে। একইভাবে মূলধনি যন্ত্রপাতি আমদানির ঋণপত্র নিষ্পত্তি কমেছে প্রায় ২২ শতাংশ। মূলধনি যন্ত্রপাতির ঋণপত্র খোলা ও নিষ্পত্তি কমার অর্থ, দেশে নতুন বিনিয়োগ কমেছে। ২০২৩ সালের জুলাই-নভেম্বরের তুলনায় ২০২৪ সালের একই সময়ে ভোগ্যপণ্য আমদানির ‘এলসি সেটেলমেন্ট’ কমেছে ১৩ শতাংশ।সরকারের পরিসংখ্যানে জানা যায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-নভেম্বরে এনবিআর গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৬২ শতাংশ কম রাজস্ব আহরণ হয়েছে; আগের বছর একই সময়ে যেখানে প্রবৃদ্ধি ছিল ১৪ দশমিক ২৭ শতাংশ।

এ ছাড়া চলতি অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো থেকে ৬৯ হাজার ৫৬ কোটি টাকার ঋণ নেওয়া হয়েছে। একই সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে আগের নেওয়া ঋণের ৫৪ হাজার ৪১৩ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে। এতে সরকারের নিট ব্যাংকঋণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৬৪৩ কোটি টাকা। গত অর্থবছরের একই সময়ে সরকার ব্যাংক থেকে কোনো ঋণ নেয়নি। চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে সঞ্চয়পত্র থেকে সরকার ঋণ নিয়েছে ৮ হাজার ৩৩২ কোটি টাকা। গত বছরের একই সময়ে সেটা ছিল ঋণাত্মক ১ হাজার ২৬৫ কোটি টাকা।আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সরকার ভ্যাট বাড়িয়েছে। সে কারণের পাশাপাশি মূল বিষয় হলো, সরকারের রাজস্ব আয় বাড়ছে না। চলতি অর্থবছরের প্রথম চার মাস (জুলাই- অক্টোবর) সময়ে শুল্ক-কর আদায়ে ঘাটতি হয়েছে ৩০ হাজার ৭৬৮ কোটি টাকা। এমনকি আগের বছরের একই সময়ে তুলনায় তা কমেও গেছে।

বাস্তবতা হলো, পৃথিবীতে যেসব দেশের কর-জিডিপির অনুপাত সবচেয়ে কম, বাংলাদেশ তাদের মধ্যে অন্যতম। গত ১৫ বছরে দেশের জিডিপি কয়েক গুণ হলেও রাজস্ব-জিডিপির অনুপাত বাড়েনি, বরং কমেছে। এর মধ্যে আবার প্রত্যক্ষ কর বা আয়করের অনুপাত কম। সে জন্য ভ্যাট বাড়িয়ে ক্ষতি পোষানোর চেষ্টা। কিন্তু সমস্যা হলো, ভ্যাট ধনী-গরিব সবার জন্যই সমান। ভ্যাট বৃদ্ধি করে রাজস্ব সংগ্রহ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অন্যায্য। কোভিড শুরু হওয়ার পর থেকে এ সমস্যা প্রকট হয়েছে। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটে তা আরও তীব্র হয়েছে। ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিপদ বেড়েছে। আইএমএফের ৪৫০ কোটি ডলার ঋণ কর্মসূচির শর্তের কারণে সরকারের ভর্তুকি কমানো হচ্ছে। এতেই চাপে পড়ছে সীমিত আয়ের সাধারণ মানুষ।

বাংলাদেশে কর ফাঁকি দেওয়ার প্রবণতা অনেক বেশি। কর ফাঁকির টাকা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই দেশে থাকে না, পাচার হয়ে যায়। প্রভাবশালীদের কর ফাঁকি বন্ধে সরকারের পদক্ষেপ নেই বলা যায়। বরং বারবার কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার মাধ্যমে সরকার কর ফাঁকিতে একরকম উৎসাহ দিয়ে আসছে। এ ছাড়া রয়েছে নানা ধরনের করছাড়। এসব ছাড়ের কারণে সরকারের রাজস্ব অনেকটা কমে যাচ্ছে। পাশাপাশি গবেষণায় দেখা গেছে, আমদানি-রপ্তানির মাধ্যমেই বাংলাদেশ থেকে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার হয়। সব মিলিয়ে একদিকে বাংলাদেশ রাজস্ব আদায় করতে পারছে না, অন্যদিকে রাজস্ব ফাঁকিও ঠেকাতে পারছে না।
এ পরিস্থিতিতে নতুন করে যুক্ত হয়েছে নিম্ন প্রবৃদ্ধির বাস্তবতা। এত দিন উচ্চ প্রবৃদ্ধির মধ্যে কর ফাঁকির প্রবণতা যতটা টের পাওয়া যেত, এখন নিম্ন প্রবৃদ্ধির মধ্যে তা আরও বেশি টের পাওয়া যাবে। যাকে বলে হাড়ে হাড়ে টের পাওয়া যাবে। রাজস্ব আদায় কম হওয়ায় সরকারের ব্যয়ের সক্ষমতাও কম। অর্থ মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের সরকারি ব্যয় হচ্ছে জিডিপির ১৩ শতাংশ।

নতুন শুল্ক কর নিয়ে জারি করা হল অধ্যাদেশ।

২০২৪-২৫ অর্থবছরে শতাধিক পণ্য ও সেবায় শুল্ক ও কর বাড়িয়েছে সরকার। এর ফলে ইন্টারনেট সেবা,কল রেট, হোটেল-রেস্তোরাঁ সেবা, কোমল পানীয়, মিষ্টি, ওষুধ, এলপি গ্যাস,...

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

You cannot copy content of this page