প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার দুই সপ্তাহের মাথায় কানাডা, মেক্সিকো ও চীন থেকে পণ্য আমদানিতে বাড়তি শুল্ক আরোপ করলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। আদেশ অনুযায়ী, কানাডা ও মেক্সিকোকে ২৫ শতাংশ হারে শুল্ক দিতে হবে। তবে কানাডার জ্বালানি পণ্যে শুল্কহার হবে ১০ শতাংশ। এ ছাড়া চীনের পণ্যে বর্তমান হারের অতিরিক্ত ১০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। ট্রাম্পের এ নির্দেশ মঙ্গলবার (৪ ফেব্রুয়ারি) থেকে কার্যকর হবে। যুক্তরাষ্ট্র চীনের ওপর বাড়তি শুল্ক আরোপ করায় বাংলাদেশের রপ্তানি বৃদ্ধির সম্ভাবনা দেখছেন এ দেশের অর্থনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলছেন, বাংলাদেশের পোশাক, চামড়াজাত পণ্য ও প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য খাত বাড়তি ক্রয়াদেশ বা অর্ডার পেতে পারে। বিনিয়োগকারীরা চীন থেকে কারখানা সরিয়ে এখন অন্য দেশে নিতে আগ্রহী হতে পারেন। সে ক্ষেত্রে গন্তব্যের একটি হতে পারে বাংলাদেশ। স্বল্প মেয়াদে বাংলাদেশ ক্রয়াদেশ ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সুফল পেতে পারে। কম ও মধ্যম দামের পোশাকের ক্রয়াদেশের একটি অংশ চীন থেকে সরে বাংলাদেশে আসবে বলে আশা করা যায়। জাপান, কোরিয়া, এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানিকারক চীনা কোম্পানিগুলোও এখন কারখানা অন্য দেশে সরিয়ে নিতে বাধ্য হতে পারে। ট্রাম্পের শুল্ক আরোপের এ সিদ্ধান্তে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কানাডা ও মেক্সিকো। জাতিসংঘের কমোডিটি ট্রেড স্ট্যাটিস্টিকস ডেটাবেসের তথ্য অনুযায়ী, কানাডার বার্ষিক রপ্তানির ৭৮ শতাংশ ও মেক্সিকোর ৮০ শতাংশ পণ্য রপ্তানি হয় যুক্তরাষ্ট্রে। বিপরীতে যুক্তরাষ্ট্রের মোট আমদানি মাত্র ১৪ শতাংশ কানাডা থেকে ও ১৫ শতাংশ আসে মেক্সিকো থেকে। ফলে যুক্তরাষ্ট্রের জন্য বিকল্প বাজার খোঁজা সহজ হলেও কানাডা ও মেক্সিকোর জন্য তা কঠিন হবে। একক দেশ হিসেবে বাংলাদেশের বৃহত্তম রপ্তানি বাজার যুক্তরাষ্ট্র। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ প্রায় ৭৬০ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে, যা দেশের মোট রপ্তানি আয়ের ১৭ শতাংশের বেশি। দেশটিতে বাংলাদেশ বেশি রপ্তানি করে পোশাক। অবশ্য যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানিতে সবচেয়ে এগিয়ে চীন। এরপর ভিয়েতনাম। ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের আওতাধীন অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) হালনাগাদ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারি থেকে নভেম্বর সময়ে চীন যুক্তরাষ্ট্রে ১ হাজার ৫২২ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে। বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানির পরিমাণ ছিল ৬৭৬ কোটি ডলার। এই রপ্তানি আয় আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় কিছুটা কম। তবে গত সেপ্টেম্বর থেকে রপ্তানি আয় বাড়ছে।