বাংলাদেশ চীনের নেতৃত্বাধীন রিজিওনাল কম্প্রিহেনসিভ ইকোনমিক পার্টনারশিপ (আরসিইপি) জোটে যোগ দেওয়ার উদ্যোগ নিয়েছে। গত সোমবার, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সম্মতিপত্র পাঠায়, যাতে বাংলাদেশকে এই জোটে অন্তর্ভুক্ত করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
২০২০ সালের নভেম্বরে চীন, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১০টি দেশ মিলিয়ে আরসিইপি চুক্তি সই হয়েছিল। ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে এটি কার্যকর হয়েছে এবং বর্তমানে এটি বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুক্ত বাণিজ্য এলাকা হিসেবে পরিচিত। এই জোটে ১৫টি দেশের মোট জনসংখ্যা ২৩০ কোটি, যা বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ।
আরসিইপি চুক্তির ফলে সদস্য দেশগুলোকে আগামী ২০ বছরের মধ্যে অধিকাংশ আমদানির ওপর শুল্ক প্রত্যাহার করতে হবে। চুক্তির আওতায় থাকবে টেলিযোগাযোগ, ব্যাংকিং, ই-কমার্স ও পেশাদার সেবার মতো ক্ষেত্রও। ‘রুলস অব অরিজিন’ পরিবর্তনের ফলে সদস্য দেশগুলো একে অপরের মধ্যে পণ্যের লেনদেনে সুবিধা পাবে।
তবে, বাংলাদেশের জন্য কিছু চ্যালেঞ্জও আছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, সদস্য দেশগুলোতে তৈরি পোশাক রপ্তানির সুযোগ সীমিত। এ কারণে বাংলাদেশকে তার রপ্তানির সক্ষমতা বাড়াতে হবে এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিবেশ উন্নত করতে হবে।
অর্থনীতিবিদ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এলডিসি উত্তরণের পর নতুন বাজারের প্রয়োজন রয়েছে, আরসিইপি যোগদান সেই লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হতে পারে। তবে, আমদানিতে শুল্ক ছাড় দিতে হলে বাংলাদেশকে দ্বিমুখী আলোচনা করতে হবে, যাতে রপ্তানির ক্ষেত্রে দ্রুত ছাড় মিলে এবং আমদানিতে ধীরে ধীরে ছাড় দেওয়া যায়।
বাংলাদেশের সরকারের আরসিইপিতে যোগদান নিয়ে আলোচনা ২০২১ সাল থেকেই চলছে, কিন্তু নানা কারণে এটি এখনো বাস্তবায়ন হয়নি।