Sunday, June 15, 2025
Sunday, June 15, 2025
বাড়িকাস্টমসচট্টগ্রামে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে"ডিজিটাল গেট ফি।"

চট্টগ্রামে বাস্তবায়িত হতে যাচ্ছে”ডিজিটাল গেট ফি।”

অটোমেশন পদ্ধতিতে চট্টগ্রাম বন্দরের অপারেশনাল কার্যক্রম পরিচালনার উদ্যোগ অনেক বছর আগের। যার সফল দুটি উদাহরণ হলো টার্মিনাল অপারেটিং সিস্টেম ও অনলাইন ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) ইস্যু।
তারই ধারাবাহিকতায় পণ্যবাহী যানবাহনের জট কমানো এবং বন্দর কার্যক্রমে আরও গতি আনার লক্ষ্যে নভেম্বরের শেষদিকে সম্পূর্ণ ডিজিটাল গেট ফি প্রদান ব্যবস্থা চালু করতে যাচ্ছে চট্টগ্রাম বন্দর।
২০২১ সালের ১১ জুলাই থেকে এটি চালুর চেষ্টা করা হলেও নানা কারণে তা বাস্তবায়ন সম্ভব হয়নি। তবে এবার সেই প্রকল্প আলোর মুখ দেখছে। বর্তমানে প্রতিটি গাড়ি বন্দরে প্রবেশের ফি বাবদ ৫৭.৫০ টাকা পরিশোধ করতে হয়।


বন্দর গেটে এসে ম্যানুয়ালি এ ফি পরিশোধে সময় লাগে ১৫ থেকে ২০ মিনিট। এতে বন্দরে গাড়ি প্রবেশে দীর্ঘ জট লেগে যায়।চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ চাচ্ছে চলতি নভেম্বর মাসেই সকল সিএন্ডএফ এজেন্টদের প্রবেশকারী পরিবহন বন্দরের টস অনলাইন সফটওয়্যারের মাধ্যমে ‘ডিজিটাল গেট ফি’ পরিশোধ করেই বন্দরে প্রবেশ করুক। এ লক্ষ্যে ১ জুলাই বন্দরের পরিচালক (নিরাপত্তা) এর দপ্তরে এক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ট্রিম ট্রেড লিমিটেড,পারাবার শিপিং, হবিগঞ্জ এগ্রো লিমিটেড, জি শিপিং লাইন্স, অমর ইন্টারন্যাশনাল নামের পাঁচ সিএন্ডএফ এজেন্টকে ‘টেস্ট এন্ড ট্রায়াল’ এর জন্য নির্বাচন করা হয়। ওইসব সিএন্ডএফ’র গেট পাস ইস্যু ও যানবাহন প্রবেশ/বাহির ব্যবস্থাপনা ‘টস অনলাইন পেমেন্ট ফর গেট টিকেট’ অটোমেশন পদ্ধতিতে বাস্তবায়ন করা হয়।


নতুন ডিজিটাল ব্যবস্থায় মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে বন্দর গেটে আসার আগে যেকোনো স্থান থেকে এন্ট্রি ফি পরিশোধ করতে পারবেন গাড়িচালকরা। টাকা পরিশোধের কাগজপত্র দেখিয়ে ১ থেকে ২ মিনিটের মধ্যেই বন্দরে প্রবেশ করতে পারবেন গাড়ি নিয়ে।


অটোমেশন পদ্ধতিকে সাধুবাদ জানিয়ে চট্টগ্রাম কাস্টমস এজেন্টস এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী মাহমুদ ইমাম বিলু বলেন, অনলাইন অটোমেশনকে আমরা সব সময় স্বাগত জানাই।
এটি পুরোদমে বাস্তবায়ন করা গেলে পরিবহন সংক্রান্ত কাজ অনেক সহজ ও দ্রুত হবে।
একই প্রসঙ্গে বাংলাদেশ কাভার্ডভ্যান ট্রাক প্রাইমমুভার পণ্যপরিবহন মালিক এসোসিয়েশনের মহাসচিব চৌধুরী জাফর আহম্মদ বলেন,বন্দরে গাড়ি প্রবেশে যানজট দূর ও গেট পাসের অতিরিক্ত ফি আদায় বন্ধে চট্টগ্রাম বন্দরের চালুকৃত এপসের মাধ্যমে গেট পাস ইস্যু একটি প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এটি পূর্বের ম্যানুয়েল পদ্ধতির চেয়ে খুবই দ্রুত ও সহজ। ঘরে/অফিসে,যেকোনো জায়গায় বসে গেট পাস পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে সময় এবং অতিরিক্ত ফি’র আদায়ের হয়রানি বন্ধ হবে।


তিনি আরো বলেন, বন্দরের এই প্রশংসনীয় উদ্যোগ সফল করতে হলে মাঠ পর্যায়ে বন্দরের বিভিন্ন গেটে দায়িত্বরত নিরাপত্তা কর্মীদের অনলাইন পেমেন্টের গেটপাস বিষয়ে স্পষ্ট ধারণা রাখতে হবে।
কারণ ইতিমধ্যে কয়েকটি অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে। অনলাইনে পেমেন্ট করে গেটপাস নেওয়ার পরও বন্দর গেটে দায়িত্বে থাকা নিরাপত্তা কর্মীরা তা প্রত্যাখ্যান করে। পরে বন্দরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়।


চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি-রপ্তানি পণ্য পরিবহনে প্রতিদিন প্রায় ৮ হাজার গাড়ি চলাচল করে। ডিজিটাল ব্যবস্থায় প্রবেশ ফি প্রদান চালুর পর পণ্যবাহী যানবাহনের জন্য স্বচ্ছ ও সুষ্ঠু প্রবেশ প্রক্রিয়া নিশ্চিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের পরিচালক (সিকিউরিটি) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. জহিরুল ইসলাম টিবিএসকে বলেন, ইতিমধ্যে আংশিকভাবে ডিজিটাল এন্ট্রি চালু হয়েছে। এর মধ্যে কিছু ফিডব্যাক আসছে, সেগুলো তারা সমাধানের চেষ্টা করছেন। নভেম্বরের তৃতীয় সপ্তাহে শতভাগ জিজিটাল গেট ফি সিস্টেমের আওতায় চলে আসবে


অনলাইন গেটপাস প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, অনলাইনে গেটপাস সংগ্রহের পদ্ধতি বন্দর অনেক আগেই চালু করেছে। তবে চালক ও হেলপারদের অনলাইনে পদ্ধতিতে গেটপাস নেওয়ার বিষয় ও পেমেন্ট দেওয়ার বিষয়টি পরিচিত করতে সময় লেগেছে।
এখন সিএন্ডএফ এজেন্টদেরও তাদের নিয়োজিত গাড়িকে অনলাইনে গেটপাস নিতে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটি ২০টি সিএন্ডএফ এজেন্টের মাধ্যমে চালু হয়েছে। পর্যায়ক্রমে নভেম্বরের মধ্যেই সব সিএন্ডএফের গাড়ির ইপেমেন্ট গেটপাস ইস্যুর পরিকল্পনা রয়েছে বন্দর কর্তৃপক্ষের।
পরিবহন শ্রমিকরা আশা প্রকাশ করেন, ডিজিটাল সিস্টেম চালু হলে আনঅফিশিয়াল চার্জ ও হয়রানি দূর হবে। আগে চালকদের অভিযোগ ছিল, প্রবেশ ফি পরিশোধ সত্ত্বেও অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের জন্য তাদেরকে চাপ দেওয়া হতো।


উল্লেখ্য, ২০২১ সালের ১১ জুলাই থেকে অনলাইনে ফি পরিশোধের পাশাপাশি প্রথাগত নিয়মে অর্থাৎ নগদ অর্থ পরিশোধের মাধ্যমেও মালবাহী গাড়ি প্রবেশের সুযোগ দেয়া হয়। ওই বছর আধুনিক এ প্রক্রিয়ার সাথে খাপ খাইয়ে নিতে দু’মাসের বেশি সুযোগ দেয়া হয়েছিল।
পরে ২ আগস্ট বন্দরের নিরাপত্তা বিভাগ থেকে চিঠি ইস্যু করে একই বছরের ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে কোনো গাড়ি অনলাইনে আবেদন ও ফি পরিশোধ না করে বন্দরে প্রবেশ করতে পারবে না বলেও ঘোষণা দিয়েছিল বন্দর কর্তৃপক্ষ। এটি এবছর থেকে আবারও বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হচ্ছে।

বন্দর সচল থাকলেও কমেছে পণ্য খালাস!

ছুটিতে বন্দর সচল থাকলেও ব্যবসায়ীদের পণ্য খালাস কমে গেছে। তাতে এখন আমদানি পণ্যবাহী কনটেইনারের স্তূপ বাড়ছে। ব্যবসায়ীরা দ্রুত পণ্য খালাস না করলে বন্দরে জট...

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে

Most Popular

You cannot copy content of this page