৩০০ কোটি টাকার শুল্ক-কর ফাঁকি উদঘাটন করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। সব ধরনের করদাতার কর ফাঁকির তদন্ত কাজও করছে সংস্থাটি। এনবিআরের আয়কর, মূল্য সংযোজন কর (মূসক) ও শুল্ক বিভাগের সংস্কার প্রক্রিয়াটিও চলমান আছে।
এনবিআরের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন মাসে আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক বিভাগ ২৮৬ কোটি টাকার কর ফাঁকির ঘটনা খুঁজে পেয়েছে। সবচেয়ে বেশি কর ফাঁকির তথ্য পেয়েছে ভ্যাট বিভাগ। এ খাতে সব মিলিয়ে ১৬৭ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য মিলেছে।
এজন্য ১০৩টি ভ্যাট ফাঁকির মামলা হয়েছে। গত তিন মাসে এসব মামলার বিপরীতে ৬৮ কোটি টাকা আদায় হয়েছে। অন্যদিকে শুল্ক বিভাগে ৩৯ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকির তথ্য পাওয়া গেছে। ৫৭টি মামলার বিপরীতে সাড়ে ৬ কোটি টাকার মতো আদায় হয়েছেও গত তিন মাসে।
এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) সব মিলিয়ে গত তিন মাসে ৭৪ কোটি টাকা আদায় করেছে। তবে প্রতিবেদনে কার কাছ থেকে কত শুল্ক-কর ফাঁকি পাওয়া গেছে তা উল্লেখ করেনি ।
সৎ করদাতারা যাতে নিরুৎসাহিত না হন সেজন্য কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়ার দুই মাসের মাথায় পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সেই সুবিধা বাতিল করে দেয় এনবিআর। গত ৯ সেপ্টেম্বর অনলাইনে বার্ষিক আয়কর বিবরণী জমার ব্যবস্থা চালু করেছে এনবিআর।
এ সেবা চালুর পর এ পর্যন্ত দুই লাখ করদাতা অনলাইনে রিটার্ন জমা দিয়েছেন। এছাড়া সুপ্রিম কোর্টে এনবিআরের প্রায় ৩০ হাজার মামলা দ্রুত নিষ্পত্তি করতে ডেটাবেজ তৈরি করে সুপ্রিম কোর্টের ডেটাবেজের সঙ্গে সমন্বয় করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
এসব মামলায় ৩০ হাজার কোটি টাকার বেশি রাজস্ব আদায় আটকে আছে। অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের হার ৮৫ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানায় এনবিআর।
আগামী মার্চের মধ্যে শুল্ক বিভাগের ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো (এনএসডব্লিউ) কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন করার লক্ষ্যও নির্ধারণ করেছে সংস্থাটি। এনবিআরের উচ্চপদস্থ একজন কর্মকর্তা বলেন, মাঠপর্যায়ে শৃঙ্খলা ফেরানোর পাশাপাশি রাজস্ব আদায়ের
পদ্ধতি ও বিধিবিধান সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দুর্নীতি ও অনিয়মের প্রমাণ পাওয়ায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ের সঙ্গে জড়িত করদাতা ও কর কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে বেশ কিছু নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের রাজস্ব
কমানোর পরও অক্টোবর মাস নাগাদ ৮.৬৯ শতাংশ রাজস্ব প্রবৃদ্ধি হয়। অক্টোবর মাসে এনবিআর এর রাজস্ব আদায় ৩০ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়। জুলাই থেকে অক্টোবর পর্যন্ত ৪ মাসে রাজস্ব আদায় হয় এক লাখ এক হাজার ৩৪৪ কোটি টাকা।
গত বৃহস্পতিবার জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) নিজেদের ৯০ দিনের কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগকে অবহিত করে প্রতিবেদন পাঠিয়েছে। পাশাপাশি রাজস্ব খাতে কী ধরনের সংস্কার পরিকল্পনা বাস্তবায়িত করা হচ্ছে, তাও জানানো হয়েছে এই প্রতিবেদনে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিংয়ের (সানেম) নির্বাহী পরিচালক সেলিম রায়হান প্রথম আলোকে বলেন, রাজস্ব খাতের সংস্কার জরুরি হয়ে গেছে। অভ্যন্তরীণ খাত থেকে রাজস্ব আদায় বাড়াতেই হবে। এতে ঋণ গ্রহণের প্রবণতা কমলে অর্থনীতির ওপর চাপ কমবে।
তিনি আরও বলেন, করদাতারা যাতে সহজে ও হয়রানিমুক্তভাবে কর দিতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। এনবিআরের প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, গত তিন মাসে আয়কর, ভ্যাট ও শুল্ক বিভাগ ২৮৬ কোটি টাকার কর ফাঁকির ঘটনা খুঁজে পেয়েছে।
সবচেয়ে বেশি কর ফাঁকির তথ্য পেয়েছে ভ্যাট বিভাগ। এই খাতে সব মিলিয়ে ১৬৭ কোটি টাকার ভ্যাট ফাঁকির তথ্য মিলেছে। এ জন্য ১০৩টি ভ্যাট ফাঁকির মামলা হয়েছে। গত তিন মাসে এসব মামলার বিপরীতে ৬৮ কোটি টাকা আদায় হয়েছে।
অন্যদিকে শুল্ক বিভাগে ৩৯ কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকির তথ্য পাওয়া গেছে। ৫৭টি মামলার বিপরীতে সাড়ে ছয় কোটি টাকার মতো আদায় হয়েছেও গত তিন মাসে। এনবিআরের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সেল (সিআইসি) সব মিলিয়ে গত তিন মাসে ৭৪ কোটি টাকা আদায় করেছে।
তবে প্রতিবেদনে কার কাছ থেকে কত শুল্ক-কর ফাঁকি পাওয়া গেছে—তা উল্লেখ করা হয়নি।অনলাইনে ভ্যাট রিটার্ন দাখিলের হার ৮৫ শতাংশ থেকে ১০০ শতাংশে উন্নীত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে জানায় এনবিআর। আগামী মার্চের মধ্যে শুল্ক বিভাগের ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো (এনএসডব্লিউ) কার্যক্রম অনলাইনে সম্পন্ন করার লক্ষ্যও নির্ধারণ করেছে সংস্থাটি।