আগামী ১ বা ২ মার্চ রোজা শুরু হচ্ছে। এর আগে এক সপ্তাহের ব্যবধানে চট্টগ্রাম বন্দরে পাঁচ ট্যাংকারে আমদানি হচ্ছে ৭৮ হাজার টন বা সাড়ে ৮ কোটি লিটার সয়াবিন তেল। আর রোজা শুরুর প্রথম সপ্তাহের মধ্যে ৪ ট্যাংকারে আরও ৫১ হাজার টন সয়াবিন তেল আসার কথা রয়েছে। অর্থাৎ রোজার এক সপ্তাহের মধ্যেই ১ লাখ ২৯ হাজার টন বা প্রায় ১৪ কোটি লিটার সয়াবিন তেল আমদানি হচ্ছে।
রোজাকে সামনে রেখে এমন সময়ে আমদানি বাড়ছে যখন বাজার থেকে বোতলজাত সয়াবিন তেল কার্যত উধাও হয়ে গেছে। এ অবস্থায় শেষ মুহূর্তে একের পর এক ট্যাংকার বন্দরে পৌঁছাতে শুরু করায় ধীরে ধীরে সয়াবিন তেলের সংকট কেটে যাবে বলে মনে করেন আমদানিকারকেরা। তবে তেলের পাইকারি ও খুচরা ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানির পর এসব তেল দ্রুত বাজারজাত করা না হলে রোজার শুরুতে বাজারের সংকট কাটবে না।
বর্তমানে বন্দরের বহির্নোঙরে এমটি চ্যাম্পিয়ন অ্যাভোনি ট্যাংকার থেকে খালাস হচ্ছে টি কে গ্রুপের আমদানি করা সয়াবিন তেল। আর্জেন্টিনার সান লরেঞ্জো বন্দর থেকে আসা ট্যাংকারটিতে রয়েছে ১৩ হাজার টন অপরিশোধিত সয়াবিন তেল। এই ট্যাংকারের তেল খালাস শেষ হওয়ার আগেই গতকাল মঙ্গলবার বন্দরে এসে পৌঁছেছে এমটি মায়ের্সক বেফোর্ট। এটিতেও টি কে গ্রুপের সয়াবিন তেল রয়েছে, যার পরিমাণ ১৫ হাজার টন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার টি কে গ্রুপের ১৫ হাজার টন সয়াবিন তেল নিয়ে বন্দরে এসে পৌঁছাবে এমটি অ্যাভেক্স নামের ট্যাংকার। সব মিলিয়ে তিনটি ট্যাংকারে টি কে গ্রুপ আনছে ৪৩ হাজার টন সয়াবিন তেল।
মেঘনা গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ (এমজিআই) এবং সিটি গ্রুপও সয়াবিন তেল আমদানি করছে। আগামী শুক্রবার এমজিআইয়ের পাঁচ হাজার টন সয়াবিন তেল নিয়ে বন্দরে আসবে এমটিএম আমস্টারডাম নামের ট্যাংকার। আগামী ২ মার্চ বন্দরে পৌঁছাবে ২৫ হাজার টন সয়াবিন তেলবাহী সি ওয়েজ গ্যালে ট্যাংকার। এই ট্যাংকার সিটি গ্রুপের ১৪ হাজার টন এবং অন্যান্য কোম্পানির ১১ হাজার টন সয়াবিন তেল আনবে। রোজা শুরুর পর আরও চার ট্যাংকারে এমজিআইয়ের নামে আমদানি হচ্ছে ৪৫ হাজার টন সয়াবিন তেল।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) তথ্যে দেখা যায়, জানুয়ারি মাসে ১ লাখ ১৭ হাজার টন সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছে, যা গত ছয় বছরে মাসিক ভিত্তিতে সর্বোচ্চ । তবে ফেব্রুয়ারি মাসের প্রথম ২১ দিনে মাত্র এক জাহাজ সয়াবিন তেল আমদানি হয়েছিল। আমদানি বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা না থাকায় সয়াবিন তেলের সংকট তীব্র হয়। এখন রোজার আগমুহূর্তে সয়াবিন তেল নিয়ে একের পর এক ট্যাংকার বন্দরে এসে পৌঁছাতে শুরু করায় সংকট বেশি দিন থাকবে না বলে দাবি আমদানিকারকদের।