চলমান অর্থবছরের পাঁচ মাস পেরিয়ে গেলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় রাজস্ব সংগ্রহ করতে পারেনি। জুলাই-নভেম্বর সময়ে রাজস্ব আদায় লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪২ হাজার ২৩৮ কোটি টাকা। পাশাপাশি, এ সময় রাজস্ব আদায় গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ২ দশমিক ৬২ শতাংশ কমে গেছে।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে মোট রাজস্ব আদায় হয়েছে ১ লাখ ২৬ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা। শুধু নভেম্বরে আদায় হয়েছে ২৫ হাজার ৩৫৯ কোটি টাকা, যা গত বছরের একই মাসের তুলনায় প্রায় ৯ শতাংশ কম।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, মূল্যস্ফীতির লাগাম টানতে সরকার যে সংকোচনমুখী মুদ্রানীতি গ্রহণ করেছে, তা ব্যবসায়িক কার্যক্রমে নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। বিনিয়োগ কমে যাওয়ায় ব্যবসার সম্প্রসারণ থেমে আছে এবং এর প্রভাব পড়ছে রাজস্ব সংগ্রহে।
অর্থনীতিবিদ ড. মাহফুজ কবির বলেন, “সংকোচনমুখী মুদ্রানীতির কারণে অর্থনীতির চাকা ধীরগতিতে ঘুরছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে ধীরে ধীরে এ নীতি থেকে বেরিয়ে আসা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ব্যাংক যদি এ নীতিতে সংশোধন আনে, তাহলে বিনিয়োগ বাড়বে, ব্যবসায়িক কার্যক্রম বৃদ্ধি পাবে, এবং রাজস্ব আদায়ে গতি ফিরবে।”
তিনি আরও বলেন, “ঋণের সুদের হার কমিয়ে আনা বিনিয়োগ আকর্ষণের একটি কার্যকর উপায়। এতে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গতি ফিরবে এবং রাজস্ব ঘাটতিও পূরণ হবে।”
অর্থ মন্ত্রণালয় চলতি অর্থবছরে ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকা রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করলেও রাজনৈতিক অস্থিরতা, আন্দোলন ও বৈশ্বিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের কারণে এ লক্ষ্য অর্জন করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, সংকট উত্তরণে অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গতিশীলতা আনতে সরকারের নীতি কাঠামোয় সমন্বয় প্রয়োজন। শুধু মুদ্রানীতি নয়, রাজস্ব ব্যবস্থার আধুনিকায়ন ও করদাতাবান্ধব পরিবেশ তৈরির মাধ্যমেও রাজস্ব আদায়ে ইতিবাচক পরিবর্তন আনা সম্ভব।