মৌলভীবাজারের বড়লেখার সুজানগর গ্রাম আগর-আতরের আঁতুড়ঘর নামে পরিচিত হলেও এ ব্যবসা এখন আশপাশের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। তবে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি, কাঁচামালের সংকট ও রপ্তানিতে কম প্রণোদনার কারণে সুগন্ধি তরল আতরের উৎপাদন কমে গেছে। এসব আগর-আতর মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপের দেশসহ জাপান ও চীনে রপ্তানি হয়। সুজানগরের আগর-আতর সম্প্রতি জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) পণ্যের স্বীকৃতিও পেয়েছে। বছরের ডিসেম্বর থেকে মে মাস পর্যন্ত আগর-আতর উৎপাদন চলে। এ সময়টা শুষ্ক মৌসুম হওয়ায় গাছ থেকে সহজে আগর সংগ্রহ করা যায়। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতি বিভাগ ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আগর-আতর রপ্তানিতে ৮ শতাংশ প্রণোদনা নির্ধারণ করে দেয়। কিন্তু এ খাতের রপ্তানিকারকেরা বলছেন, খরচ যে পরিমাণ বেড়েছে তাতে আগর–আতর রপ্তানির প্রণোদনাও বাড়ানো দরকার।
এ বিষয়ে আগর-আতর ম্যানুফ্যাকচারার্স এক্সপোর্টার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক কবির আহমেদ চৌধুরী বলেন, একসময় বছরে ১৫০ কোটি টাকার আগর-আতর বিদেশে রপ্তানি হতো। গত কয়েক বছরে তা কমে ১০০ কোটি টাকার নিচে নেমেছে। আগর থেকে পাওয়া সুগন্ধি আতরই শুধু রপ্তানি হয় না। আগরকাঠ ও বর্জ্যও রপ্তানি হয়ে থাকে। দেশে কোনো কাজেই আগর-আতর ব্যবহার করা হয় না।
এ খাতের সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা জানান, আগর-আতর শ্রমঘন শিল্প। এই শিল্পের সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ জড়িত। পরোক্ষভাবে এ সংখ্যা দুই লাখেরও বেশি। কয়েক বছরে শ্রমিকদের মজুরি, উৎপাদন খরচও বেড়েছে। বর্তমানে এ শিল্পে প্রতি ঘনফুট গ্যাসের দাম ৩০ টাকা ৫০ পয়সা। গ্যাসের দাম আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ অবস্থায় সম্ভাবনাময় এ শিল্পকে টিকিয়ে রাখতে হলে প্রণোদনা বাড়াতে হবে। অথবা চা-শিল্পের মতো এ শিল্পের জন্য প্রতি ঘনফুট গ্যাসের দাম ১১ দশমিক ৯৩ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
আগর-আতর উৎপাদনে ভাটা!
RELATED ARTICLES