দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে এ বছর ২৪ লাখ কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেওয়া হয়েছিল সরকার দ্বারা, যার মেয়াদ ছিল গত শনিবার পর্যন্ত। তবে এই সময়ের মধ্যে রপ্তানি হয়েছে মাত্র ৫ লাখ ৪৪ হাজার কেজি, যা অনুমোদিত পরিমাণের এক-চতুর্থাংশেরও কম।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) অনুযায়ী, গত রবিবার পর্যন্ত ইলিশ রপ্তানি হয়েছে ৫ লাখ ৪৪ হাজার কেজি। এই ইলিশ ভারতে যশোরের বেনাপোল ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি করা হয়েছে, যা থেকে আয় হয়েছে ৫৪ লাখ মার্কিন ডলার বা ৬৪ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। প্রতিটি চালানের রপ্তানি মূল্য ছিল কেজিতে ১০ ডলার।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয় মোট ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল। কিন্তু এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, মাত্র ২১টি প্রতিষ্ঠানই রপ্তানি করতে সক্ষম হয়েছে, অর্থাৎ ২৮টি প্রতিষ্ঠান অনুমতি পেয়েও রপ্তানি করতে পারেনি।
এর মধ্যে একটি প্রতিষ্ঠান, চট্টগ্রামের ইছানগরের মাসুদ ফিশ প্রসেসিং অ্যান্ড আইস কমপ্লেক্স, ৫০ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছিল, কিন্তু তারা এক কেজি ইলিশও রপ্তানি করতে পারেনি। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আশরাফ হোসেন জানান, ভারতের ক্রেতাদের কাছ থেকে সাড়া না পাওয়ার কারণে রপ্তানি সম্ভব হয়নি।
অন্যদিকে, চট্টগ্রামের প্যাসিফিক সী ফুডস ৫০ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছিল, কিন্তু তারা মাত্র সাড়ে ১৩ হাজার কেজি রপ্তানি করতে পেরেছে। প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক দোদুল কুমার দত্ত জানিয়েছেন, এবার ইলিশ আহরণ কম এবং দাম বেশি হওয়ায় তারা যথারীতি রপ্তানি করতে পারেননি।
এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, ৪৯টি অনুমোদিত প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৪৮টি ৫০ হাজার কেজি করে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি পেয়েছিল, তবে মাত্র ৫টি প্রতিষ্ঠান তাদের পুরো পরিমাণ রপ্তানি করতে সক্ষম হয়েছে।
গত বছরও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ৭৯টি প্রতিষ্ঠানকে ৩ হাজার ৯৫০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছিল, কিন্তু তা থেকে প্রায় ৮০২ টনই রপ্তানি করা সম্ভব হয়েছিল।
বাংলাদেশের রপ্তানি নীতিতে ইলিশ শর্তসাপেক্ষে রপ্তানিযোগ্য পণ্যের তালিকায় রয়েছে, তাই সরকারের অনুমোদন নিয়েই সুস্বাদু এ মাছ রপ্তানি করা হয়। ২০১৯ সালে প্রথম ইলিশ রপ্তানি শুরু হওয়ার পর, ২০২৪ সালের মধ্যে ৬১ লাখ ৪৪ হাজার কেজি ইলিশ রপ্তানি হয়েছে, যার মাধ্যমে আয় হয়েছে ৬ কোটি ১ লাখ ডলার বা ৫৬৩ কোটি টাকা।