মাছ কাটার পর যেই আঁশ ফেলে দেওয়া হয়, সেসব যত্নসহকারে শুকানো হচ্ছে। কারণ, ফেলনা এসব মাছের আঁশ বিদেশে রপ্তানি হয়। মাছের আঁশ শুকানোর কাজ করে মো. মাহাবুব আলমসহ কয়েকজন যুবকের জীবনের গল্প বদলে গেছে। মাহাবুব কুমিল্লা নগরের সংরাইশ এলাকার ইয়াকুব আলীর ছেলে।
তিনি কুমিল্লা নগরের অন্যতম প্রধান কাঁচাবাজার রাজগঞ্জ বাজারে দুই যুগের বেশি সময় ধরে মাছ কাটার কাজ করেছেন। শুরুর দিকে মাছ কেটে দিয়ে যা আয় হতো, তা দিয়েই কোনোরকমে চলছিল তাঁর সংসার। দিনভর মাছ কাটার পর আঁশগুলো ফেলে দিতেন বাজারের পাশের ডাস্টবিনে। হঠাৎ একদিন এই ফেলনা আঁশগুলোই ভাগ্য বদলে দিতে শুরু করে তাঁর।
বর্তমানে রাজগঞ্জ বাজারে তাঁর মাছ কাটার দোকান আছে। সেখানে কয়েকজন মাছ কাটেন ও মাছের আঁশ শুকান, আর তিনি সব কাজ তদারক করেন। এখন প্রতি কেজি মাছের শুকনা আঁশ বিক্রি করছেন ৭০ টাকায়। কুমিল্লার এই মাছের আঁশ রপ্তানি হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। পাইকারদের কাছ থেকে মাহাবুব জানতে পেরেছেন, মাছের আঁশগুলো চীনসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি হয়।
সেখান থেকে এগুলো জাপানসহ বিভিন্ন দেশে চলে যায়। গোমতীর চরের ভেতরে কয়েকটি স্থানে শুকানো হচ্ছে মাছের আঁশ। আঁশ শুকানোর কাজে জড়িত এক তরুণ জানান, আঁশ শুকানো ছাড়াও মাছের উচ্ছিষ্ট অংশ দিয়ে তৈরি হচ্ছে একধরনের তেল। মাছ ও মুরগির খাদ্য তৈরির উপাদান সেখান থেকে তৈরি হচ্ছে। মূলত মাছ কাটার পর আঁশ, নাড়িভুঁড়িসহ উচ্ছিষ্ট অংশ দিয়েই তৈরি হচ্ছে তেল ও মাছ-মুরগির খাদ্য তৈরির উপাদান।
মাহাবুবের দেখাদেখি অনেকেই এখন মাছের আঁশ শুকানোর কাজ করছেন। মাহাবুব বলেন, বছরখানেক আগে তিনিসহ কয়েকজন মিলে এই কাজ শুরু করেন। আঁশ ছাড়া বাকি উচ্ছিষ্ট অংশগুলো জ্বালিয়ে তেল বের করা হয়। বাকি অংশ মাছ-মুরগির খাদ্য তৈরিতে ব্যবহৃত হয়। ওই তেলও মাছ-মুরগির খাদ্য তৈরির সময় মিশ্রণ করা হয়। এতে সুন্দর একটি ঘ্রাণ আসে। কক্সবাজারের মাছ-মুরগির খাদ্য তৈরির প্রতিষ্ঠানগুলো তাঁদের কাছ থেকে তেল সংগ্রহ করে থাকে।
মাছের আঁশ থেকে তৈরি হচ্ছে তেল- বাড়ছে আয়।
RELATED ARTICLES