জানা গেছে, ব্যাংকের আমদানি ঋণপত্র বা এলসি দায় পরিশোধে বিলম্ব করছে বেশ কিছু ব্যাংক।আর্থিক অনিয়মে দুর্বল হয়ে পড়া ব্যাংকগুলোকে আরও তারল্য সহায়তা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর। একই সঙ্গে যেসব ব্যাংক ঋণপত্র বা এলসি দায় পরিশোধে বিলম্ব করবে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
এলসির দায় পরিশোধে বিলম্ব করলে ৭ দিনের মধ্যে ব্যাংকগুলোর সব ওভারডিউ বা মেয়াদোত্তীর্ণ এলসির দায় পরিশোধ করতে হবে।নির্ধারিত সময়ে দায় পরিশোধে ব্যর্থ হলে তার কারণ জানাতে হবে। পাশাপাশি এখন থেকে এলসি বা ঋণপত্রে দায় বিলম্ব হলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাও শাস্তির আওতায় আসবেন। এ বিষয়ে ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহীদের চিঠি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র হুসনে আরা শিখা এ তথ্য নিশ্চিত করেন।হুসনে আরা শিখা বলেন, ‘যেসব ব্যাংকের তারল্য পরিস্থিতি ভালো রয়েছে, তারা যেন সংকটে থাকা ব্যাংকগুলোকে আরও তারল্য সহায়তা করে।এছাড়া ডলার মার্কেট নিয়ে কোনো চ্যালেঞ্জ আছে কি না, তা জানতে চান গভর্নর। ব্যাংকগুলো জানিয়েছে, ডলার মার্কেট আগের চেয়ে উন্নতি হয়েছে। জানুয়ারি পর্যন্ত আরও উন্নতি হবে। বর্তমানে ডলার মার্কেটে চ্যালেঞ্জ না থাকলেও অভারডিউ বা মেয়াদোত্তীর্ণ এলসির দায় পরিশোধে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে।কয়েকটি ব্যাংক এলসির দায় যথাসময়ে পরিশোধ করছে না। এতে অন্য ব্যাংকগুলোর সমস্যা হচ্ছে।এখন প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলারের মতো মেয়াদোত্তীর্ণ এলসির দায় রয়েছে। যার কারণে বাংলাদেশের সুনাম নষ্ট হচ্ছে। বেড়ে যাচ্ছে আমদানি এলসির খরচ। তাই কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগামী ৭ দিনের মধ্যে সব আমদানি দায় পরিশোধ করতে বলেছে।
ব্যাংকের এমডিদের কাছে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়েছে, পর্যাপ্ত ডলার না থাকলে প্রয়োজনে ডলার কিনে দায় পরিশোধ করতে হবে। নির্ধারিত সময় যদি কোনো ব্যাংক দায় পরিশোধে ব্যর্থ হয়, তাহলে এর যথাযথ কারণ জানাতে হবে। এ ছাড়া, এখন থেকে কোনো ঋণপত্র খোলার আগে গ্রাহকের ঋণ পরিশোধের সক্ষমতা যাচাই করে খুলতে হবে। যদি দায় পরিশোধে ব্যর্থ হয়, তাহলে এলসির সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাকেও শাস্তির আওতায় আনা হবে।গভর্নর জানিয়েছেন, ডলার মার্কেটে কেউ যাতে ম্যানিপুলেশন না করে। কোনো ব্যাংক যাতে বেশি দরে ডলার বিক্রির জন্য ডলার ধরে না রাখে। আবার ক্রস কারেন্সিতে ট্রান্সফার করে লাভবান হওয়ার চেষ্টা না করে। ভবিষ্যতে যেসব ব্যাংক এলসির দায় পরিশোধে বিলম্ব করবে, তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাদের এলসি খুলতে দেওয়া হবে না।’